আল্প আরসালানঃ বুয়ুক সেলজুকলু

ফিরে দেখা……

বরাবরের মতই “অনুবাদ মিডিয়ার“অনুবাদ দিয়ে দেখে নিলাম আল্প আরসালান বুয়ুক সেলজুকলু’র তৃতীয় এপিসোড।
তৃতীয় এপিসোডে পরিচালক মূলত পরবর্তী ঘটনাগুলোর প্রেক্ষাপট তৈরি করেছেন।এর সাথে সাথে বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর দিয়ে রেখেছেন এই পর্বে।

আকচা হাতুন ও নিজামুল মুলকঃ
গত পর্বের একদম শেষে পরিচালক যে টুইস্ট আমাদের জন্য রেখেছিলেন এই পর্বের শেষে সেটা একদম পরিষ্কার করে সমাধান করে দিয়েছেন।আকচা হাতুনের বাস্তবিক ইতিহাস হয়তো ভিন্ন,কিন্তু সিরিজের প্রয়োজনে পরিচালক এই পরিবর্তন টা করেছেন।যা দর্শকদের তুলনামূলক আরো বেশি আকৃষ্ট করবে।তৃতীয় এপিসোডের প্রেক্ষিতে নিঃসন্দেহে বলা যায়,আকচা হাতুন আর নিজামুল মুলকের বিচ্ছেদ-মিলন অনেকটা সেনজার আর মালিক শাহের মত।যা দর্শকদের ইমোশনালি অ্যাটাচড করে রেখেছিল দীর্ঘ একটা সময় ধরে।তবে পরিচালক হয়তো আরো ভিন্ন কিছু দেখাতে পারেন এই দুজনকে নিয়ে। কারণ পরিচালক নিশ্চয় চাইবেন না আল্প আরসালান সিরিজে উয়ানিশের মত একই কাহিনীর পুনরাবৃত্তি হোক।
অন্যদিকে টেকফুর কেকাভমোনেসের না পাওয়ার বেদনা থেকে নতুন প্রতিশোধের আগুন জ্বলে উঠবে। এখন তার হাতে বন্দী আছে তার একসময়ের প্রেয়সী মারিয়ার মুসলমান স্বামী “হাসান“! যার জন্য মারিয়া মুসলমান হয়েছিল,মরিয়ম নাম ধারণ করেছিলো আর জন্ম দিয়েছিল একটি ফুটফুটে মেয়ে সন্তান!
যার জন্য সে জীবন দিয়েছিল!
তাই তৃতীয় পর্বের শেষটা নতুন প্রতিশোধের বার্তা দিচ্ছে অবিরত…..

ভাসপুরকান দূর্গঃ
আল্প আরসালান সিরিজের মূল কাহিনী এগুচ্ছে ভাসপুরকান দূর্গকে কেন্দ্র করে।আবার এ দূর্গের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রিন্স ইয়ান্নিসকে যে মূলত মুসলিম বন্দীদের উপর গণহত্যা চালিয়েছিলো।হয়তো মুসলিমরা এই দূর্গ দখল করবে, কিন্তু এই দূর্গের সাথে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে আছেন আকচা হাতুন।হয়তো আকচা হাতুনের কাছে এমন কিছু আছে যা পরবর্তীতে দূর্গ জয়ে সাহায্য করবে (নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না)। দ্বিতীয়ত,আকচা হাতুন ভাসপুরকান জয়ের আগে নিজের পরিচয় প্রকাশ করতে পারছেন না।বাবাকে কাছে পেয়েও বাবা না ডাকতে পারার আক্ষেপ যেন বারবার উয়ানিশের কথা স্বরণ করিয়ে দিচ্ছে।

আলপাগুতঃ শত্রুর দূর্গে গোপন অস্ত্র———
গত পর্বেই আলপাগুতের ব্যাপারে সামান্য ধারণা দিয়েছিলেন এমরে কোনুক। নিতান্তই ভালো মানুষ টাইপের মানুষ টা দিরিলিসেও দর্শকদের মন জয় করেছিল নেগেটিভ ক্যারেক্টার দিয়েও।এবার আল্প আরসালানে ইতিবাচক চরিত্র নিয়ে এসেছেন।তার পরিচয়টাও দিয়েছেন পরিচালক।তিনি আকিনায় হাতুনের ছেলে।তার যাত্রা আর আকচা হাতুনের ভাগ্য একই সূত্রে গাঁথা। বহু বছর আগে বসতিতে গণহত্যা চালানোর সময়ে আলপাগুত পালিয়ে এসেছিলেন আকচাকে বাঁচাতে। ফলে মায়ের কাছে তিনি মৃত,তিনি শুধুমাত্র বেঁচে আছেন রাষ্ট্রের জন্য।আল্প আরসালানের মত রাষ্ট্রের জন্য জীবন বিসর্জন দেওয়া বীরদের সাহায্য করার অপেক্ষায় তার দিন কাটে।কাফেরদের অপবিত্রতার ভিড়ে পরিত্রতা রক্ষার কঠিন দায়িত্ব পালন করছেন নিয়মিত।এদিকে তার মতই আকচা হাতুন তার পিতার কাছে মৃত,তিনি অপেক্ষা করছেন তার গোপনীয়তা প্রকাশ করার জন্য।আর একটি শব্দ মুখ ফুটে উচ্চারণের জন্য….বাবা!!!

প্রিন্স ইয়ান্নিসঃ
একজন বোকা ও রাগী প্রিন্সের চরিত্র ফুটিয়ে তুলতে প্রিন্স ইয়ান্নিসের বিকল্প নেই।সে বিরক্তিকর হলেও আশেপাশের মানুষগুলো তাকে নিয়েই খেলে যাচ্ছে।রোমান ডিয়াজোন তাকে হটিয়ে ভাসপুরকান অধিকার করতে চাচ্ছেন।পরিকল্পনামতো ইয়ান্নিসের ব্যাজ সেলজুক সুলতান অবধি পৌঁছেও দিয়েছেন,কিন্তু তার পরিকল্পনা বানচাল করে দিয়েছেন এভদোকিয়া।উপস্থিত বুদ্ধির জোরে সুলতান তুগরিল কে সন্তুষ্ট করতে তার বেগ পেতে হয়নি।অন্যদিকে কন্স্টান্টিন দুকাসও ইয়ান্নিসকে বাঁচাতে চাচ্ছেন, কিন্তু সেটা ইয়ান্নিসের প্রতি মায়া নয়. এভদোকিয়ার প্রতি ভালোবাসার কারণে।আর কেকাভমোনেস চাচ্ছেন তিনি সবকিছু ঠিকঠাক করে দিবেন।এদিকে সম্রাটের কাছে রোমান ডিয়াজোনের বার্তাবাহক হয়তো পৌঁছে যাচ্ছে, ইয়াননিস’ই গণহত্যার মূলহোতা!…….

পরিশিষ্টঃ সিরিজ শুরুর আগে পরিচালক বারবার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, আকচা হাতুনের চরিত্রটা অন্য দশটা সিরিজের মত শুধুমাত্র স্ত্রীর চরিত্র হবে না।তার চরিত্রে নানা বিশেষন থাকবে।তৃতীয় পর্বে সেটা ভালোই বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি।পুরো পর্বের সবখানে যেনো আকচা হাতুনের উপস্থিতি টের পাওয়া গেছে……..

অন্যদিকে আমির বোজান ও তার সৈন্যদল যেন রহস্যময়তা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে…
তারা কারা?? তারা কি চায়?? তাদের তথাকথিত “দাওয়াহ” কি? কেনইবা তারা অকাতরে জীবন দিতে একজোট হয়েছে??
সব প্রশ্নের উত্তর পেতে আরো অপেক্ষা করা লাগবে হয়তো…

লেখক: আব্দুল্লাহ ফয়সাল

তৃতীয় পর্বের ওয়েবসাইট লিংকঃ https://onubadmedia.com/seljuks2e3/

সার্ভার-১

সার্ভার-২ 1080

সার্ভার-৩