in-page ads
History
Trending

মুহাম্মাদ আলি জওহর : খিলাফত আন্দোলনের মূল নেতৃবৃন্দদের অন্যতম

মুসলিম নেতা, আন্দোলনকারী, পণ্ডিত, সাংবাদিক ও কবি

মুহাম্মাদ আলি জওহর : খিলাফত আন্দোলনের মূল নেতৃবৃন্দদের অন্যতম । তিনি ছিলেন একজন ভারতীয় মুসলিম নেতা , আন্দোলনকারী , পণ্ডিত , সাংবাদিক ও কবি । ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের মুসলিম প্রেসিডেন্টদের মধ্য তিনি ষষ্ঠতম । তিনি নিখিল ভারত মুসলিম লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ।

 

মুহাম্মাদ আলি জওহরের খিলাফত আন্দোলনের সাথে সম্পর্ক

 

১৯০৬ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত নিখিল ভারত মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠা বৈঠকে মুহাম্মাদ আলি অংশগ্রহণ করেন । ১৯১৮ সালে তিনি এই দলের প্রেসিডেন্টের দায়িত্বপালন করেন। ১৯২৮ সাল পর্যন্ত তিনি লীগে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।

১৯১৯ সালে ইংল্যান্ডে মুসলিম প্রতিনিধিদলে তিনি প্রতিনিধিত্ব করেন। এ দলের উদ্দেশ্য ছিল তুরস্কের সুলতান ও মুসলিমদের খলিফাকে যাতে মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক‌ ক্ষমতাচ্যুত না করেন সে বিষয়ে প্রভাবিত করার জন্য ব্রিটিশ সরকারকে রাজি করানো। ব্রিটিশরা তাদের আবেদন প্রত্যাখ্যান করে। ফলে খিলাফত কমিটি গঠিত হয়। এ কমিটি ভারতের মুসলিমদের সরকারের প্রতিবাদ ও বয়কটে নেতৃত্ব দেয়।

 

আরো পড়ুন :

বাংলার প্রাচীন জনপদ সমূহ

বাংলা সালতানাত : স্বধীনতা প্রয়াসকাল পর্ব :০১

সোনারগাঁও :সুলতান ফখর -উদ-দীন মুবারক শাহ

 

এসময় মাওলানা মুহাম্মদ আলি ১৯২১ সালে মুসলিম জাতীয়তাবাদিদের নিয়ে একটি বোর্ড গঠন করেন এতে ছিলেন মাওলানা শওকত আলি, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, হাকিম আজমল খান, মুখতার আহমেদ আনসারি। এছাড়া মহাত্মা গান্ধীও এতে ছিলেন। গান্ধী মুসলিমদের সাথে ঐক্যের নিদর্শন হিসেবে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ও হাজার হাজার হিন্দুর সমর্থন অর্জন করেন। একইসাথে মুহাম্মদ আলি গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলনে সমর্থন দেন এবং ভারতজুড়ে কয়েকশত প্রতিবাদে উৎসাহ দেন। ব্রিটিশ সরকার তাকে গ্রেপ্তার করে। খিলাফত সম্মেলনের সময় রাজদ্রোহী বক্তৃতার দায়ে তিনি দুইবছরের জন্য কারারুদ্ধ হন।

১৯২৩ সালে মাওলানা মুহাম্মদ আলি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

কংগ্রেস থেকে বিচ্ছিন্ন

 

খিলাফত আন্দোলনের ব্যর্থতা ও চৌরি-চৌরা ঘটনার পর মহাত্মা গান্ধীর অসহযোগ প্রত্যাহার করে নেয়ার ফলে মুহাম্মদ আলি মনঃক্ষুণ্ণ ছিলেন। তিনি তার সাপ্তাহিক হামদর্দ পুনরায় চালু করেন এবং কংগ্রেস ত্যাগ করেন। তিনি নেহেরু রিপোর্টের বিরোধিতা করে। এতে সাংবিধানিক সংস্কার এবং ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অধীনে স্বাধীন জাতি হিসেবে ডমিনিয়ন স্ট্যাটাসের প্রস্তাব করা হয়। মোতিলাল নেহরুর নেতৃত্বে কংগ্রেসের হিন্দু ও মুসলিম সদস্যদের একটি কমিটি এই রিপোর্ট লেখে। সাইমন কমিশনের বিরুদ্ধে এটি একটি প্রধান প্রতিবাদ ছিল।

কমিশন সংস্কার প্রস্তাবের জন্য ভারতে আসে কিন্তু তাতে ভারতের দাবির প্রতি কর্ণপাত করা হয়নি। এসময় মুহাম্মদ আলি কারাগারে ছিলেন। তাই সর্বদলীয় সম্মেলনে নেহেরু রিপোর্ট শওকত আলি, বেগম মুহাম্মদ আলি ও কেন্দ্রীয় খিলাফত কমিটির ৩০ জন অন্যান্য সদস্য কর্তৃক নেহরু রিপোর্ট উত্থাপিত হয়। অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন আবদুল মজিদ দরিয়াবাদি, আজাদ সোবহানি, মাগফুর আহমেদ আজাজি, আবুল মহসিন মুহাম্মদ সাজ্জাদ ও অন্যান্যরা।

মুহাম্মদ আলি নেহেরু রিপোর্টের মুসলিমদের পৃথক নির্বাচনের বিরোধিতা করেন এবং মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ ও লীগের ১৪ দফার প্রতি সমর্থন জানান। অন্যান্য মুসলিম নেতা মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, হাকিম আজমল খান ও মুখতার আহমেদ আনসারির বিপরীতে গিয়ে তিনি গান্ধীর সমালোচনা করেন। তারা গান্ধী ও ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসকে সমর্থন করতেন।

তৃতীয় আগা খানকে চেয়ারম্যান করে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে মাওলানা মুহাম্মদ আলি অংশগ্রহণ করেন। ১৯২১ সালে ব্রিটিশ সরকার করাচির খালিকদিনা হলে আদালত স্থাপন করে। এতে তাকে আড়াই বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়। 

 

১৯৩১ সালের ৩ জানুয়ারি মুহাম্মদ আলি মৃত্যুবরণ করেন। তার ইচ্ছানুযায়ী তাকে জেরুজালেমে দাফন করা হয়। কুব্বাত আস সাখরার কাছে তার কবরে উৎকীর্ণ রয়েছে, এখানে শায়িত আছে সাইয়িদ মুহাম্মদ আলি আল হিন্দি।

 

আরো পড়ুন :

বাংলা সালতানাত : বাংলার প্রথম আমির এবং প্রথম খলিফা

খিজির (আঃ) : কি নবী ছিলেন ?

আল্লাহ তা’আলার পরিচয় বিষয়ক আয়াতের সংখ্যা কত ?

 

 

বাংলা সালতানাত, ইতিহাস , পৌরাণিক কাহিনী , ধর্মতত্ত্ব , দর্শন সহ আরও অনেক বিষয় সম্পর্কে জানতে ঘুরে আসুন মিস্টিরিয়াস এক্স রাইটার – রহস্য জগতের এক বিস্ময় থেকে

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button